কুয়াকাটার যে স্পটগুলো পর্যটকদের হাতছানিতে ডাকে
কুয়াকাটার যে স্পটগুলো পর্যটকদের হাতছানিতে ডাকে ॥
কাজী সাঈদ॥
সমুদ্রের গর্জন, উতাল-পাতাল ঢেউ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, দীর্ঘতম সৈকত দেশী-বিদেশী ভ্রমন পিপাসু দর্শনার্থীদের কাছে টানছে। তাই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন। এখানে অনেকগুলো পর্যটন স্পট রয়েছে। পর্যটকদের কাছে টানতে এসব স্পটগুলো অবদান কোন অংশেই কম নয়। কিন্তু সমুদ্র কন্যা কুয়াকাটার পর্যটন স্পটগুলো পরিকল্পিত পরিকল্পনা সংকটে রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে এখানকার স্পটগুলো সাজাতে পারলে বিশ্বের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলোর তালিকাভূক্ত হবে কুয়াকাটা এমন মত বিশিষ্টজনদের।
অবহেলিত এসব স্পটগুলো পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে আসতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কুয়াকাটাকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের মাষ্টার প্লান অনুমোদন করেছে। সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু মাষ্টার প্লান বাস্তবায়নে মন্থর গতি থাকায় কিছুটা হতাশ বিনিয়োগকারীরা। ইতোমধ্য অনেক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্প গুটিয়ে নিয়েছেন।
কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা ভ্রমন পিপাসুরা যে স্পটগুলো ঘুরে বাড়তি আনন্দ পায় তার মধ্যে গঙ্গামতি অন্যতম। প্রকৃতির নিপুন হাতে গড়া আকাঁ বাঁকা লেকের দু’পাশে সবুজে ঢাকা অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা গঙ্গামতি লেক ও সবুজ বন। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে মটরসাইকেল যোগে বা অটো ভ্যান রিজার্ভ করেন আগতরা। গঙ্গামতির চর, সবুজ বেষ্টনী, কলকল ¯্রােতের লেক, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করেন। গাছে গাছে বানরের লাফালাফি অনেকটাই মজার বিষয়। গঙ্গামতির বিশাল চরে লাল কাঁকড়ার দলাদলি যে কারো নজর কাড়ে। এর একটু পূর্ব দিকে কাউয়ারচরে গঙ্গামতির সব বৈশিষ্ট আছে। এখানকার আলাদা বৈশিষ্ট হচ্ছে সমুদ্রের বুকের কয়েকটি বিশাল ডুবুচর। বর্তমান মৌসুমে অতিথি পাখির কলরবে মাতোয়ারা এ চরটি।
কুয়াকাটার আসা পর্যটকদের আরেকটি আকর্ষণ সুন্দরবনের পূর্বাংশ ফাতরার বন। সুন্দরবনের বিকল্প হিসেবে এ বনে অসংখ্য পর্যটক ঘুরতে আসে। সরকারীভাবে এখানে ইকো পার্কসহ পর্যটকদের জন্য বাংলো ও পিকনিক স্পট তরী করা হয়েছে। বনটিতে ভ্রমনে যেতে হলে নৌপথের বিকল্প নেই। কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রে ১৫টি ট্যুরিস্ট বোর্ড ভাসতে থাকে। জিরো পয়েন্টে রয়েছে টিকিট কাউন্টার। এগুলো সকালের দিকে ছেড়ে যায় আবার দুপুরে চলে আসে। আবার দুপুরের পরে গিয়ে সন্ধ্যার আগে চলে আসে। ট্যুরিস্ট বোটগুলোতে যাওয়া আসার ভাড়া জন প্রতি ২২০ টাকা।
কুয়াকাটায় ভ্রমনে ইকোপার্ক (বর্তমানে জাতীয় উদ্যান)ও ঝাউবনে ঘুরতে যায় না এমন পর্যটন পাওয়া খুবই মুশকিল। ইকোপার্কের বিশাল এলাকা ঘুরতে পর্যটকরা অনেক সময় ব্যয় করেন। এখানে সারি সারি ঝাউবনসহ রয়েছে পিকনিক ষ্পট। অনেকগুলো লেকে প্যাডেল বোট নিয়ে ভাসেন আগতরা। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ২কিঃমিঃ পূর্বদিকে ঝাউবন। পার্কে গাড়ী পার্কিং, পিকনিক সেট, খাবার পানির ব্যবস্থাসহ পর্যটকদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
কুয়াকাটার অদূরে ক্র্যাব ল্যান্ড নামে একটি দ্বীপ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন তুফানের চর বলে ডাকে। ২০০৫ সালের শুরুর দিকে সবুজের সন্ধানে সমুদ্র পথ বের হওয়া গাছের বন্ধু গ্রীন ওয়ার্ল্ড কমিনিউকেশন এর চেয়ারম্যান হেদায়তুল ইসলাম হেলাল ও তার দুই বন্ধুসহ এই দ্বীপে বেড়াতে যান। দ্বীপটিতে অসংখ্য লাল কাকঁড়ার বিচরণ দেখে নামকরন করেন ক্র্যাব ল্যান্ড। এর পর থেকেই ক্র্যাব ল্যান্ড নামে পরিচিতি লাভ করে। এই দ্বীপের কাছাকাছি গেলে মনে হয় একটি ছোট সবুজের দ্বীপ সমুদ্রের মাঝে ভাসছে। অপরদিকে দ্বীপের বীচটা লাল কাকঁড়ায় যেন ঢেকে আছে। চার পাশে সবুজ মাঝখানে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের ভেলায় চড়ে যেন মন আনন্দে ভাসছেন দর্শনার্থীরা। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে সকালের দিকেই স্পীড বোট ছেড়ে আসে এই দ্বীপে। জনপ্রতি ৭০০ টাকা অনেকেই দেখতে যান দ্বীপটি।
সুন্দরবনের বিকল্প হিসেবে গড়ে ওঠা কুয়াকাটার পূর্বাংশে দ্বিতীয় সুন্দর বন নামে খ্যাত ৩০টি সবুজ বনায়নের মধ্যে অন্যতম সোনার চর। নদী সমুদ্র ও বনের মধ্যে দিয়ে সোনার চর উপভোগ করা দর্শনার্থীদের জন্য এক আনন্দময় ভ্রমন। খুব কাছ থেকে হরিণের দেখা মেলে এই চরে। কুয়াকাটা থেকে ট্যুরিস্ট বোটে ৩ ঘন্টা সময় লাগে সেখানে যেতে। যারা সুন্দর বন গিয়েও হরিণের দেখা পায়নি তাদের জন্য সুখবর নিয়ে তৈরী আছে সোনার চর। এই বনটি দর্শনে আরও ১০টি বনের দেখা মেলে। নদীর মাঝে বিচ্ছিন্ন এসব বন দেখতে দেখতে ভ্রমন পিপাসুরা হারিয়ে যায় সবুজের দেশে।
কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে ৫কিলোমিটার পশ্চিম দিকে এই শুটঁকি পল্লী। ইলিশ রূপচাদা, পোমা, লইট্টা, রূপসী, ভোল, ছুড়ি, হাঙ্গর,শাপলাপাতাসহ অসংখ্য প্রকৃতির মাছ রোদে শুকিয়ে বিশ্বের ১০টি দেশে রপ্তানী করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে শুটঁকী ব্যবসায়ীরা। বিশাল এলাকা চাং বানিয়ে শুটকি তৈরীর পদ্ধতি দেখতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভীর করেন আগতরা। কুয়াকাটার শুটঁকি অনেক সুস্বাদু। তাই এর কদর অনেক। পর্যটকরা নিয়ে যান বাসা বাড়িতে।
কুয়াকাটার আরেকটি আকর্ষণ ছিল ফয়েজ মিয়ার নারিকেল বাগান। বহু বছর পূর্বে সরকারের কাছ থেকে দুইশ একর জমি বন্দোবস্ত নিয়ে ফয়েজ মিয়া গড়ে তোলেন নারকেল বাগান। তার নামানুসারে স্থানীয় লোকজন এ বাগানটির নাম ডাকে ফয়েজ মিয়ার নারকেল বাগান। তবে এই প্রতিষ্ঠানটির নাম ফার্মস এ্যান্ড র্ফামস লিঃ। বাগানটির বেশীর ভাগ সমুদ্র গর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে এই বাগানটি জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে আছে। সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন নারকেল বাগান।
এখানকার আদিবাসী রাখাইনদের ইতিহাসের সাথে মিশে আছে কুয়াকাটা। এ অঞ্চলে আদিবাসী রাখাইনরা এক কথায় কুয়াকাটার অলংকার। কেরানীপাড়া, নয়াপাড়া, থঞ্জুপাড়া, আমখোলাপাড়া, কালাচাঁনপাড়া, নাইউরীপাড়া, লক্ষ্মীপাড়া, দিয়ারআমখোলাপাড়া, মিশ্রিপাড়ায় রাখাইন সম্প্রদায় বসবাস করছেন। পর্যটকরা এসব পাড়াগুলো ঘুরে ঘুরে রাখাইনদের কৃষ্টি কালচার উপভোগ করেন। তাদের টং ঘরের নিচে বসে রাখাইনদের হাতের তৈরী মজাদার পিঠা এবং হস্ত চালিত তাঁত শিল্প দেখেন সকলে। দেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মন্দির কুয়াকাটা মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ মন্দির। কুয়াকাটা থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্বদিকে এ মন্দির অবস্থিত। মন্দির ঘর জুড়ে এই মূর্তিটি ৩৬ ফুট উচু। এছাড়াও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পূর্বে পাশে অষ্ট ধাতুর মূর্তি রয়েছে। ৮টি ধাতুর মিশ্রনে এই বিহারের মূর্তিটি তেরী।
এসকল স্পটগুলো পরিকল্পনার অভাবে অবহেলিত রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। মটরসাইলকেল ছাড়া ভ্রমনের সুযোগ পাচ্ছে না আগত পর্যটকরা। অনেক পর্যটক আসেন যারা মটরসাইকেলে উঠতে অভ্যস্ত না। তাদের দাবি রাস্তাঘাট নির্মাণ, আলোর ব্যবস্থার পাশাপাশি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
সদ্য দায়িত্ব বুঝে নেয়া কুয়াকাটার পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা বলেন, ‘বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পরিকল্পিত পরিকল্পনার মাধ্যমে কুয়াকাটাকে সাজানো হবে।’
# # #
অবহেলিত এসব স্পটগুলো পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে আসতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কুয়াকাটাকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের মাষ্টার প্লান অনুমোদন করেছে। সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু মাষ্টার প্লান বাস্তবায়নে মন্থর গতি থাকায় কিছুটা হতাশ বিনিয়োগকারীরা। ইতোমধ্য অনেক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্প গুটিয়ে নিয়েছেন।
কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা ভ্রমন পিপাসুরা যে স্পটগুলো ঘুরে বাড়তি আনন্দ পায় তার মধ্যে গঙ্গামতি অন্যতম। প্রকৃতির নিপুন হাতে গড়া আকাঁ বাঁকা লেকের দু’পাশে সবুজে ঢাকা অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা গঙ্গামতি লেক ও সবুজ বন। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে মটরসাইকেল যোগে বা অটো ভ্যান রিজার্ভ করেন আগতরা। গঙ্গামতির চর, সবুজ বেষ্টনী, কলকল ¯্রােতের লেক, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করেন। গাছে গাছে বানরের লাফালাফি অনেকটাই মজার বিষয়। গঙ্গামতির বিশাল চরে লাল কাঁকড়ার দলাদলি যে কারো নজর কাড়ে। এর একটু পূর্ব দিকে কাউয়ারচরে গঙ্গামতির সব বৈশিষ্ট আছে। এখানকার আলাদা বৈশিষ্ট হচ্ছে সমুদ্রের বুকের কয়েকটি বিশাল ডুবুচর। বর্তমান মৌসুমে অতিথি পাখির কলরবে মাতোয়ারা এ চরটি।
কুয়াকাটার আসা পর্যটকদের আরেকটি আকর্ষণ সুন্দরবনের পূর্বাংশ ফাতরার বন। সুন্দরবনের বিকল্প হিসেবে এ বনে অসংখ্য পর্যটক ঘুরতে আসে। সরকারীভাবে এখানে ইকো পার্কসহ পর্যটকদের জন্য বাংলো ও পিকনিক স্পট তরী করা হয়েছে। বনটিতে ভ্রমনে যেতে হলে নৌপথের বিকল্প নেই। কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রে ১৫টি ট্যুরিস্ট বোর্ড ভাসতে থাকে। জিরো পয়েন্টে রয়েছে টিকিট কাউন্টার। এগুলো সকালের দিকে ছেড়ে যায় আবার দুপুরে চলে আসে। আবার দুপুরের পরে গিয়ে সন্ধ্যার আগে চলে আসে। ট্যুরিস্ট বোটগুলোতে যাওয়া আসার ভাড়া জন প্রতি ২২০ টাকা।
কুয়াকাটায় ভ্রমনে ইকোপার্ক (বর্তমানে জাতীয় উদ্যান)ও ঝাউবনে ঘুরতে যায় না এমন পর্যটন পাওয়া খুবই মুশকিল। ইকোপার্কের বিশাল এলাকা ঘুরতে পর্যটকরা অনেক সময় ব্যয় করেন। এখানে সারি সারি ঝাউবনসহ রয়েছে পিকনিক ষ্পট। অনেকগুলো লেকে প্যাডেল বোট নিয়ে ভাসেন আগতরা। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ২কিঃমিঃ পূর্বদিকে ঝাউবন। পার্কে গাড়ী পার্কিং, পিকনিক সেট, খাবার পানির ব্যবস্থাসহ পর্যটকদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
কুয়াকাটার অদূরে ক্র্যাব ল্যান্ড নামে একটি দ্বীপ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন তুফানের চর বলে ডাকে। ২০০৫ সালের শুরুর দিকে সবুজের সন্ধানে সমুদ্র পথ বের হওয়া গাছের বন্ধু গ্রীন ওয়ার্ল্ড কমিনিউকেশন এর চেয়ারম্যান হেদায়তুল ইসলাম হেলাল ও তার দুই বন্ধুসহ এই দ্বীপে বেড়াতে যান। দ্বীপটিতে অসংখ্য লাল কাকঁড়ার বিচরণ দেখে নামকরন করেন ক্র্যাব ল্যান্ড। এর পর থেকেই ক্র্যাব ল্যান্ড নামে পরিচিতি লাভ করে। এই দ্বীপের কাছাকাছি গেলে মনে হয় একটি ছোট সবুজের দ্বীপ সমুদ্রের মাঝে ভাসছে। অপরদিকে দ্বীপের বীচটা লাল কাকঁড়ায় যেন ঢেকে আছে। চার পাশে সবুজ মাঝখানে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের ভেলায় চড়ে যেন মন আনন্দে ভাসছেন দর্শনার্থীরা। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে সকালের দিকেই স্পীড বোট ছেড়ে আসে এই দ্বীপে। জনপ্রতি ৭০০ টাকা অনেকেই দেখতে যান দ্বীপটি।
সুন্দরবনের বিকল্প হিসেবে গড়ে ওঠা কুয়াকাটার পূর্বাংশে দ্বিতীয় সুন্দর বন নামে খ্যাত ৩০টি সবুজ বনায়নের মধ্যে অন্যতম সোনার চর। নদী সমুদ্র ও বনের মধ্যে দিয়ে সোনার চর উপভোগ করা দর্শনার্থীদের জন্য এক আনন্দময় ভ্রমন। খুব কাছ থেকে হরিণের দেখা মেলে এই চরে। কুয়াকাটা থেকে ট্যুরিস্ট বোটে ৩ ঘন্টা সময় লাগে সেখানে যেতে। যারা সুন্দর বন গিয়েও হরিণের দেখা পায়নি তাদের জন্য সুখবর নিয়ে তৈরী আছে সোনার চর। এই বনটি দর্শনে আরও ১০টি বনের দেখা মেলে। নদীর মাঝে বিচ্ছিন্ন এসব বন দেখতে দেখতে ভ্রমন পিপাসুরা হারিয়ে যায় সবুজের দেশে।
কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে ৫কিলোমিটার পশ্চিম দিকে এই শুটঁকি পল্লী। ইলিশ রূপচাদা, পোমা, লইট্টা, রূপসী, ভোল, ছুড়ি, হাঙ্গর,শাপলাপাতাসহ অসংখ্য প্রকৃতির মাছ রোদে শুকিয়ে বিশ্বের ১০টি দেশে রপ্তানী করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে শুটঁকী ব্যবসায়ীরা। বিশাল এলাকা চাং বানিয়ে শুটকি তৈরীর পদ্ধতি দেখতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভীর করেন আগতরা। কুয়াকাটার শুটঁকি অনেক সুস্বাদু। তাই এর কদর অনেক। পর্যটকরা নিয়ে যান বাসা বাড়িতে।
কুয়াকাটার আরেকটি আকর্ষণ ছিল ফয়েজ মিয়ার নারিকেল বাগান। বহু বছর পূর্বে সরকারের কাছ থেকে দুইশ একর জমি বন্দোবস্ত নিয়ে ফয়েজ মিয়া গড়ে তোলেন নারকেল বাগান। তার নামানুসারে স্থানীয় লোকজন এ বাগানটির নাম ডাকে ফয়েজ মিয়ার নারকেল বাগান। তবে এই প্রতিষ্ঠানটির নাম ফার্মস এ্যান্ড র্ফামস লিঃ। বাগানটির বেশীর ভাগ সমুদ্র গর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে এই বাগানটি জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে আছে। সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন নারকেল বাগান।
এখানকার আদিবাসী রাখাইনদের ইতিহাসের সাথে মিশে আছে কুয়াকাটা। এ অঞ্চলে আদিবাসী রাখাইনরা এক কথায় কুয়াকাটার অলংকার। কেরানীপাড়া, নয়াপাড়া, থঞ্জুপাড়া, আমখোলাপাড়া, কালাচাঁনপাড়া, নাইউরীপাড়া, লক্ষ্মীপাড়া, দিয়ারআমখোলাপাড়া, মিশ্রিপাড়ায় রাখাইন সম্প্রদায় বসবাস করছেন। পর্যটকরা এসব পাড়াগুলো ঘুরে ঘুরে রাখাইনদের কৃষ্টি কালচার উপভোগ করেন। তাদের টং ঘরের নিচে বসে রাখাইনদের হাতের তৈরী মজাদার পিঠা এবং হস্ত চালিত তাঁত শিল্প দেখেন সকলে। দেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মন্দির কুয়াকাটা মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ মন্দির। কুয়াকাটা থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্বদিকে এ মন্দির অবস্থিত। মন্দির ঘর জুড়ে এই মূর্তিটি ৩৬ ফুট উচু। এছাড়াও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পূর্বে পাশে অষ্ট ধাতুর মূর্তি রয়েছে। ৮টি ধাতুর মিশ্রনে এই বিহারের মূর্তিটি তেরী।
এসকল স্পটগুলো পরিকল্পনার অভাবে অবহেলিত রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। মটরসাইলকেল ছাড়া ভ্রমনের সুযোগ পাচ্ছে না আগত পর্যটকরা। অনেক পর্যটক আসেন যারা মটরসাইকেলে উঠতে অভ্যস্ত না। তাদের দাবি রাস্তাঘাট নির্মাণ, আলোর ব্যবস্থার পাশাপাশি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
সদ্য দায়িত্ব বুঝে নেয়া কুয়াকাটার পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা বলেন, ‘বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পরিকল্পিত পরিকল্পনার মাধ্যমে কুয়াকাটাকে সাজানো হবে।’
# # #
No comments