কুয়াকাটার অলংকার আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায়

কুয়াকাটার অলংকার আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায় 
photo

কাজী সাঈদ॥
পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার অংলকার আদিবাসী রাখাইনরা। এখানকার বসবাসকারী রাখাইনদের জীবন যাপন থেকে শুরু করে কৃষ্টিকালচার, হস্তচালিত তাঁতশিল্প পর্যটকদের দারুনভাবে আকৃষ্ট করে। সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় ভ্রমনে এসে পর্যটকরা বাড়তি আনন্দ পায়। এক কথায় আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায় পর্যটন নগরী কুয়াকাটার ঐতিহ্য। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ লীলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পকে আরও গতিশীল করতে হলে রাখাইনদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি এ সম্প্রদায় যেন বাঙালি জনগোষ্ঠির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে দেশান্তরিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে রাষ্ট্রকে এমন মত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
কিন্তু বিগত কয়েক দশক ধরে এ সম্প্রদায় নিজ দেশে পরবাসী হয়ে পড়েছেন। এ জনগোষ্ঠির আবাদী জমি ও শ্মশান বেদখল হয়েছে। দিন দিন হামলা-মামলা, অন্যায়, অবিচার, বঞ্চনা, প্রতারণার শিকার হয়ে পার্শ¦বর্তী দেশ মায়ানমার ফিরে যাচ্ছে। এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায় ৫০ হাজারের বেশী জনগোষ্ঠী থেকে দিন দিন কমে এখন ৪ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়ত এমন একদিন আসবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শুধু কাগজপত্রেই এ অঞ্চলের রাখাইন সম্প্রদায় সম্পর্কে জানতে পারবে। তবে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে এমন আশংকা রয়েছে। কুয়াকাটা থেকে রাখাইনরা হারিয়ে গেলে পর্যটন শিল্পের ওপর এর প্রভাব পরবে বলে মতামত রয়েছে।

রাখাইন সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমে যাওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে বলে কুয়াকাটায় বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মালম্বী রাখাইন সমাজপতিরা দাবী করেছেন। তাদের মতে, জন্মসুত্রে ও পরিচয়গতভাবে রাখাইনরা বাংলাদেশে দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক। কিন্তু স্থানীয় রাজনীতিতে আজও তারা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নি। নিজ ভাষাসহ সাধারণ শিক্ষায় রাখাইনরা অনগ্রসর ও পশ্চাপদ। রাখাইন শিশুরা পিতা-মাতার নিকট থেকে নিজস্ব ভাষা আয়াত্ব করে কথা বলতে পারলেও তারা লিখতে ও পড়তে পারে না। কারণ তাদের নিজস্ব ভাষা শিক্ষার জন্য কোন প্রতিষ্ঠানিক সুযোগ নেই। আজ পর্যন্ত সরকারীভাবে এ অঞ্চলের রাখাইনদের ভাষা শিক্ষার কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে নি। বেসরকারী সংস্থা কারিতাস উদ্যোগ নিলেও তা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখে নি।

কুয়াকাটা সংলগ্ন লতাচাপলী ইউনিয়নের গোড়াআমখোলা পাড়ায় একটি কমিনিউটি স্কুলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেড়শতাধীক কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা বাড়ির কাছে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু বিনা বেতনে চার বছর শিক্ষাদান শেষে শিক্ষকরা অন্যত্র চাকুরী নিয়েছে। শেষমেষ শিক্ষক সংকটে স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে চার কক্ষ বিশিষ্ট আধা পাঁকা স্কুল ঘরটি থাকলেও শিক্ষার কোন কার্যক্রম নেই। যার ফলে দেড়শতাধীক শিশু শিক্ষার্থীর মধ্যে শতাধীক ছাত্র-ছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। প্রাথমিক স্তর থেকেই সিটকে পড়ল আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
এদিকে কুয়াকাটার কেরানীপাড়ায় রাখাইনদের নিজস্ব সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য কালচারাল একাডেমি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেটি নির্মাণের পর থেকে বাংলাদের কৃষি ব্যাংক চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে। যার ফলে রাখাইনদের নিজস্ব কৃষ্টি, কালচার ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র আর থাকল না।

রাখাইনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান জনগোষ্ঠী বাঙ্গালি সমাজের একশ্রেনীর লোকদের ভূমিগ্রাসের হীন তৎপরতায় রাখাইনরা প্রতারিত ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে দিনের পর দিন। ফলে কৃষি জমি হারিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে দারিদ্র ক্রমশ ঘিরে ধরেছে তাদের। চলমান আইন শৃংখলা পরিস্থিতি কোনক্রমে বিপর্যস্ত হলেই এ সম্প্রদায় নিতান্তই নিরুপায় ও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তারা গা ঝাড়া দিয়ে আর উঠতে পারে না। নিজেদের মধ্যে সংগঠনিক শক্তিকে সংহত করতে না পেরে এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইনরা সকল ক্ষেত্রে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। জাতিগত ও শ্রেনীগতভাবে প্রশাসনের লোকদের সাথে রাখাইনদের অবস্থানগত পার্থক্য রয়েছে এবং সে কারণেও প্রশাসনের সহযোগিতা ও অনুকম্পা থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে বলে দাবি করেছেন এ সম্প্রদায়ের সমাজপতিরা।

তাদের দেয়া তথ্য মতে, স্থানীয় ভূমিগ্রাসীদের আগ্রাসন মনোভাবের কারণে চাষের জমি হারিয়ে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে রাখাইনরা দেশান্তরিত হচ্ছে। গত ১০ বছরে শুধুমাত্র লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া বসবাসরত সেকালের জনপ্রতিনিধি সেচামং রাখাইন, সেঅংজান তালুকদার, গোড়াআমখোলাপাড়ার সমাজপতি মংনান্ট তালুকদার লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে দুই’শ কম ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন। পরবর্তীতে জমিজমা বেহাত হওয়ায় ছেলেমেয়েদের মিয়ানমার পাঠিয়ে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে স্ব-স্ত্রীক জন্মভূমি ত্যাগ করেন। একই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে গত বছর গোড়াআমখোলা পাড়া আশ্রায়ন প্রকল্পের বসাবাসকারী স্ব-পরিবারে মংনান্টচিন ও তেওয়ার দেশান্তরিত হয়েছে। দিয়ারআমখোলাপাড়া থেকে স্ব-পরিবারে থয়সাইচিন, লক্ষীপাড়ার লাক্রুসে জন্ম ভূমি ছেড়েছেন অনেক আগেই।

এভাবে নাম না জানা কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকা থেকে অসংখ্যক রাখাইন পরিবার বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার পাড়ি দিয়েছেন। ইতোমধ্যে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন গোড়াআমখোলা পাড়ার চানসে রাখাইন ও তার পিতা লাচিমোর ৬ সদস্যের একটি যৌথ পরিবার। চলতি বছরের শেষদিকে অথবা আগামী বছরের প্রথমদিকে মিয়ানমার যাবেন বলে পরিবারটি জানিয়েছেন। একই পাড়ার তেননান ও মংথুই পরিবার জমিজমা নিয়ে হামলা মামলার শিকার হয়ে এখন নিঃস্ব প্রায়। জমিজমা সংক্রান্ত ঝামেলা মিটাতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ থেকে দ্রুত নিস্পত্তি না হলে হয়ত এ পরিবারটিও পাড়ি দিবেন।

তেননান রাখাইন এর বাবা মংথুই রাখাইন জানিয়েছেন, স্থানীয় ভূমিদস্যুরা তাদের পরিবারকে দেশ ছাড়া করার অসৎ লক্ষ্যে তার মালিকানাধীন ১৩ একর জমি জাল-জালিয়াতিভাবে ভূঁয়া বায়না দলিল সৃষ্টি পূর্বক হয়রাণি করছে। তাদের প্রায় ১০একর জমি প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসীরা গ্রাস করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এছাড়াও দেশ ত্যাগ করে পাশ্ববর্তী দেশ মায়ানমার, বার্মায় ফিরে যাওয়ার পিছনে কাজ করছে একটি কুসংস্কার। রাখাইন সম্প্রদায় অনেকেই বিশ্বাস করে তাদের বসবাসের আশেপাশে যখনই বাঁধ বা ভেরী নির্মাণ ও নদীগুলো ভরাট হবে এবং আরাকান ভূখন্ড হতে এ অঞ্চলে আগমনের মেয়াদ দু’শত বছর (১৭৮৪-১৯৮৪) অতিবাহিত হবে তখন আর এ অঞ্চলে তাদের বসবাস করা উচিত নয়। এরপরও কেউ বসবাস করলে তাদের ওপর নেমে আসবে নানা রকম দূর্যোগ ও বিপদ এমন বিশ্বাস রাখাইনদের পূর্ব পুরুষ থেকে চলে আসছে। এ কুসংস্কার এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইনরা আজও বিশ্বাস করছে।

কুসংস্কারের বিষয়ে প্রবীন রাখাইন সমাজপতি বাবু মংনান্ট তালুকদার তার একটি লেখায় লিখেছেন, এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইনরা কুসংস্কার বিশ্বাস করে বিধায় কিছু সংখ্যক রাখাইন দেশ ত্যাগ করেছেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, চল্লি¬শ শতকের শেষভাগে এ অঞ্চলগুলোতে সর্বমোট ২৪২টি রাখাইন পাড়া বা পল্লী ছিল। তবে বাড়ি বা ঘরের সংখ্যা ও জনসংখ্যার পরিসংখ্যান সঠিকভাবে পাওয়া যায় নি। প্রবীন রাখাইনরা দাবি করেন পটুয়াখালী জেলায় ৫০ হাজারের উপরে রাখাইনদের বসবাস ছিল। বর্তমানে রাখাইন জনসংখ্যা ৪ হাজারের নিচে নেমে এসেছে।

সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটার আশপাশের কালাচানপাড়া, গোড়াআমখোলাপাড়া, দিয়ারআমখোলাপাড়া, নয়াপাড়া, নাইউরীপাড়া, মংথয়পাড়া, থঞ্জুপাড়া, মিশ্রিপাড়া, লক্ষ্মীপাড়া, বৌলতলীপাড়া, পক্ষীয়াপাড়া,  কেরানীপাড়ায় এখনও রাখাইনরা বসবাস করছেন। আমতলী উপজেলার তালতলী থানার আশপাশে তালতলীপাড়া, ছাতনপাড়া, গোড়াঠাকুরপাড়া, আগাঠাকুরপাড়া, মনুসেপাড়া, অংকোজানপাড়া, তাঁতীপাড়া, লাউপাড়া, নামেসেপাড়া, কবিরাজপাড়া, সওদাগড়পাড়া ও তালুকদারপাড়ায় এখনও রাখাইনরা স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে। বর্তমানে যেসব এলাকায় এ সম্প্রদায় এখনও বসবাস করছেন তাদের পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা এবং বেদখল হওয়া আবাদী জমি ও শ্মশান দখলমুক্ত করলে রাখাইনদের অস্তিত্ব টিকে থাকবে বলে সমাজপতিরা আশ্বস্ত করেছেন।

মৎস্য বন্দর আলীপুর বাজার সংলগ্ন কালাচারপাড়ার রাখাইনদের কথা হলে তারা অভিযোগ করেন, শিববাড়িয়া নদীর ওপর নির্মিত শেখ রাসেল সেতুর পূর্বপাশে তাদের শ্মশানটি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখলে রেখেছিল।  সম্প্রতি শশ্মানটি দখল মুক্ত হয়েছে। এ অঞ্চলের এমন কোন পাড়ার শ্মশান নেই যা দখল হয় নি। বিভিন্ন সময় তারা বেদখল হওয়া শ্মশান উদ্ধারে তৎপর হলে প্রভাবশালীদের দাপটে তা থমকে দাঁড়ায়।

রাখাইনদের জমি হাতছাড়া হওয়ার ব্যাপারে গোড়াআমখোলাপাড়ার বাসিন্দা তেননান্ট রাখাইন বলেন, ‘একটি স্বার্থনেষী প্রভাবশালী মহল ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে আমাদের জমি দখলে নেয়ার পায়তারায় সর্বদা লিপ্ত রয়েছে’।

এ অঞ্চলের প্রধান জনগোষ্টি রাখাইনদের জমিই দখল করে নি। তাদের আগ্রাসি মনোভাবে কারণে বহু রাখাইন পাড়া আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং অবশিষ্টগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে। কুয়াকাটার আশেপাশে এবং তালতলীর বড়বগি বহু পাড়া নামে থাকলেও সেখানে কোন রাখাইনদের বসবাস নেই। রাখাইনদের বসবাস না থাকায় তাদের দেয়া নাম ব্যবহৃত হয় না। রাখাইন পল্ল¬ীর প্রধান বা মাদবরের নামে গ্রামের নামকরণ হলেও বর্তমানে তাও বিলুপ্তে পথে। দেশের প্রধান জনগোষ্ঠি মুসলামানদের নামে নতুন করে নামকরণ করেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, লতাচাপলী ইউনিয়নের পুনামাপাড়া থেকে ইসলামপুর, পুরানপাড়া থেকে আছালত খাঁ পাড়া, ডংকুপাড়া থেকে রসূলপুর, হুইচানপাড়া থেকে হোসেন পাড়া, কালাচানপাড়া থেকে আলীপুর নামকরণ করা হয়েছে।  

প্রবীন রাখাইনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাখাইনরা এক সময় জায়গা জমি ধন দৌলতে খুবই স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ ছিল। প্রত্যেক পরিবারে প্রচুর চাষের জমি ও ধন দৌলত থাকায় তাদের বাড়তি আয়ে তারা গড়ে তুলেছিলেন বড় বড় বৌদ্ধ বিহার (প্যাগোডা), শ্মশান (চে-শেই) ও শান বাধানো পুকুর। সাঁজ পোশাক, সোনা-গয়না পড়ে রাখাইন মেয়ে ও বৌ’রা সদা হাসি খুশিতে মেতে থাকত। ১৯৩০ হতে ১৯৬০ খ্রিঃ পর্যন্ত প্রতিটি রাখাইন পাড়ায় শত শত রাখাইন নারী-পুরষ ও শিশুরা নানা আমোদ ফূর্তিতে দিন কাটাত। প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং বৈশাখী পূর্নিমা, চৈত্র সংক্রান্তি বা সাংগ্রান, নববর্ষ উৎযাপনে জলকেলী উৎসবসহ সবকটি পূর্নিমার তিথিতে রাখাইনরা ব্যাপক আনন্দে করত। এছাড়া শ্রমন ও বিবাহ অনুষ্ঠান, মৃত্যুর পর শ্রদ্ধা নিবেদন, বিশেষ করে বৌদ্ধ  বিহারাধ্যক্ষের মৃত্যু পরবর্তী শ্রদ্ধা নিবেদন ভাবগম্বীর পরিবেশে বৃহৎ উৎসব আকারে সম্পন্ন করা হত। রাখাইনরা আমোদ প্রমোদ অত্যন্ত পছন্দ করেন। কারো সঙ্গে দেখা হলে নারী পুরুষ নির্বিশেষে অভিবাদন জানান এবং মৃদু হেসে কুশল বিনিময় করেন। এটি রাখাইনদের ঐতিহ্যগত স্বভাবের অর্ন্তগত। সেই কল-কাকলিতে সদা মুখরিত রাখাইন জনপদ যেন বিরান ভূমে পতিত হচ্ছে। বর্তমানের এ সম্প্রদায়টি ভুলতে বসেছে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি। বছরে দু-একটি অনুষ্ঠান উৎযাপিত হলেও তা শুধুই নামে মাত্র। 

সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাখাইন শিল্পগোষ্ঠি’র পৃষ্ঠপোষক গোড়া আমখোলাপাড়ার বাবু চোতেন বলেন, ‘আর্থিক দৈন্যতায় দু’বেলা-দু’মুঠো খাবার সন্ধান করতেই যখন বেগ পোহাতে হচ্ছে তখন সংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করা অস্বাভাবিক। তারপরও বিলুপ্ত হওয়া এ রাখাইন সংস্কৃতি ধর্মীয় চেতনা ও মূল্যবোধের কারণে আকঁড়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সরকারী-বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ সংস্কৃতি পূনঃরূদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস’।

রাখাইন নারী আন্দোলনের নেত্রী ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস’র রাখাইন আইসিডিপি বরিশাল বিভাগীয় প্রকল্প ইনচার্জ মেইনথিন প্রমিলা বলেন, ‘কারিতাস ২০০৭ সাল থেকে রাখাইন সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার জন্য তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে। # # #

No comments

Powered by Blogger.