তাসনিন কেন জিপিএ-৫ পাবে না?
তাসনিন কেন জিপিএ-৫ পাবে না?
কাজী সাঈদ ॥কাজী ইসরাত জাহান তাসনিন আমার কন্যা। বর্তমানে মহিপুর কো-অপ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ২০১৭ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। ফলাফল প্রকাশের অপেক্ষায় ছিলো। তাসনিন জিপিএ-৫ পাবে ওর বিশ্বাস ছিলো। বিশ্বাস ছিলো আমারও। ওর স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে আশ্বস্ত করেছিলো। শিক্ষকদের আশা ছিলো শুধু জিপিএ-৫ নয়, বৃত্তি পাবে। তাসনিনের রেজাল্ট প্রকাশিত হলো, অপেক্ষা কমলো না। আরও অপেক্ষায় থাকতে হলো। প্রকাশিত ফলাফলে তাসনিন ৪.৩৩ পেয়েছে। এটা তাসনিন মানতে পারে নি। মানতে পারেন নি ওর স্কুল শিক্ষকরা, প্রাইভেট শিক্ষক। মানতে পারে নি ওর মা এবং আমি নিজেও। যখন রেজাল্ট দেখলাম তখন আমার বিশ্বাস হলো না। রেজাল্ট শুনে তাসনিন যতটা না কাঁদলো তার চেয়ে বেশি কাঁদলো ওর মা। তখনকার পরিস্থিতি সামলাতে আমার খানিকটা বেগ পেতে হয়েছিলো। আমি প্রকাশিত রেজাল্টের প্রতি আস্থা হারালেও বুঝতে দিলাম না। ওর মাকে দমক-টমক আর তাসনিনকে সান্তনা দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে কয়েক ঘন্টা সময় লেগেছিলো। সর্বশেষ প্রকাশিত রেজাল্টে কোথাও একটা ভুল হয়েছে, পুনঃগননার আবেদন করলে ঠিক হয়ে যাবে আশ্বস্ত করলাম।
একপর্যায়ে তাসনিনের আগ্রহ দেখে অনলাইনে পুনঃগননার আবেদন করলাম। তিনটি বিষয়ে আবেদন করতে হলো। ইংরেজী, ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি-এ তিন বিষয়ে জিপিএ-৫ পায়নি। তাসনিনের অপেক্ষা পুনঃরেজাল্টের জন্য। গত ১ মার্চ আমার মোবাইলে ম্যাসেজ আসলো। রেজাল্টে উন্নতি হলো, কিন্তু জিপিএ-৫ পেলো না। ইংরেজীতে আগে পেয়েছিলো ৭৩ নম্বর পুনঃগননায় পেয়েছে ৮০ নম্বর। ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষায় ৭৭ নম্বর থেকে উন্নতি হয়ে ৮০ নম্বর হয়েছে। বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতিতে ৫৭ নম্বর থেকে এক বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮ নম্বর হয়েছে। কিন্তু তাসনিন এখনও জোর দিয়ে বলছে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতিতে ৯০ নম্বরের নিচে পাবে না। পাবে না কেন আমি নিজেই তো নৈর্ব্যক্তিক ৪৭টি সঠিক দেখেছি। পুনঃফলাফল পেয়ে তাসনিনের স্কুল শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলাম। তাদের সকলের ভাষ্য পুনঃগননার পর আর কোন সুযোগ নাই। অবশেষে তাসনিনকে বুঝিয়ে আগামীর জন্য প্রস্তুতি নিতে বললাম। তাসনিনও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এতক্ষণে হয়তো পাঠকদের মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। ক্লাস ফাইভের জিপিএ-৫ দিয়ে কী হবে? জিপিএ-৫ এর জন্য এত কিছু কেন করলাম? আপনাদের মতো প্রশ্ন আমারও। কিন্তু এরমধ্যে কিছু একটা কারণ আছে বলেই তো এত আবেদন-নিবেদন। একজন সচেতন অভিভাবক তথা সচেতন নাগরিক হিসেবে কারণ খোঁজাটা আমার নৈতিক দায়িত্ব কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। এই অদৃশ্য কারণটা জনসম্মুখে বের করার জন্যই আজকের লেখাটি লিখছি।
তাসনিন পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানাধিন আমজেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। শুধু তাসনিন নয় ওদের ক্লাসের ওমর এলাহী রুদ্র, মেহেরাব আজফার, সারিয়া আক্তার, আফিফা আক্তার, জিপিএ-৫ পাওয়ার মতো স্টুডেন্ট ছিলো। শিক্ষকদের আশা ছিলো ওদের মধ্য থেকে কমছে কম তিনজনে বৃত্তি পাবে। বৃত্তি তো দুরের কথা কেউ জিপিএ-৫ পেলো না। এছাড়াও কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের পুত্র আবদুল্লাহ ইবতেদায়ী পরীক্ষায় পরিবেশ পরিচিতি সমাজ ও বিজ্ঞান বিষয়ে ০৭ নম্বর পেয়েছিলো, কিন্তু পুনঃগননায় পেয়েছে ৮২ নম্বর। কিন্তু কেন? ফলাফল পুনঃগননার জন্য ওরা সবাই আবেদন করেছিলো। ১ মার্চ তারিখের প্রকাশিত ফলাফলে সকলের উন্নতি হয়েছে, কিন্তু জিপিএ-৫ পায় নি কেউ। সকলের নম্বর বাড়লো, কারো নম্বর কমলো না কেন? তাহলে কি যিনি প্রথমে খাতা দেখছিলেন তিনি কলাবিক্রির দোকানদারের মতো তিনটায় হালি গুনছিলেন? পাঁচটায় গুনতে পারলেন না কেন?
এবার আসি ফলাফল পুনঃগননার মানে কী? বিভিন্ন মহলের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে যা জানতে পেরেছি, তা হলো খাতার ভিতরে প্রত্যেকটি প্রশ্নের নম্বরের যোগফল পুনঃগননা। কোন প্রশ্নের নম্বর বাড়ানো বা কমানো নয়। পুনঃগননায় ওদের সকলের নম্বর বাড়লো, কারো নম্বর কমলো না। তারমানে খাতার ভিতরের নম্বর গননায় ভুল হয়েছিলো। এখন প্রশ্ন হলো যে শিক্ষক একটি খাতার নম্বর যোগ করতে পারে না বা ভুল করেন সে কেমন শিক্ষক। তিনি কতটা দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করেন? কতটা অসচেতন হলে এরকম অজ¯্র ভুল হয়। তিনি কী শুধুমাত্র পাশাপাশি সিরিয়ালের পাঁচটি খাতায় ভুল করেছেন? নাকি আরও অনেকের খাতায় ভুল করেছেন এর নিশ্চিয়তা কে দেবে? যিনি এত ভুল করলেন তিনি পরীক্ষার খাতা দেখার কতটা যোগ্যতা রাখেন? আশা করি শিক্ষা অফিসের কর্তাব্যক্তিরা ভেবে দেখবেন। তাসনিনের তিনটি বিষয়ে পুনঃগননার আবেদন করতে ৬০০ টাকা জমা দিতে হয়েছে। এই টাকাটা কে দেবে? প্রতিটি বিষয়ে ২০০ টাকা করে জমা দিতে হয়েছে। পূর্বের প্রকাশিত ফলাফলের চেয়ে এখন উন্নতি হয়েছে, নম্বর বাড়ছে, জিপিএ-৫ বাড়ছে, এখন কী হবে? নম্বর বাড়ছে টাকাটা ফেরৎ দেন, নম্বর কমলে আরও জরিমানা নেন। যাই হোক মূল আলোচনায় ফিরি।
যেসকল শিক্ষকরা পরীক্ষার খাতার নম্বর গননায় ভুল করেছেন তাদের কী আসলেই ভুল হয়েছে? নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল করেছেন? আমার বিশ্লেষণে তাদের ভুল হয় নি, ভুল করেছেন এবং সেটা ইচ্ছাকৃত ভাবে করেছেন। বর্তমানে শিক্ষকদের একটি অংশের নীতি-নৈতিকতার মারাত্মক অবক্ষয় হয়েছে। বিশেষ করে আর্থিক লোভ তারা কোনভাবেই সামলাতে পারছেন না। প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য তাদের এতটা নিচে নামিয়েছে যে নিচে নামার আর জায়গা নেই। থাকলে আরও নিচে নামতে দিধাবোধ করত না। ছাত্র-ছাত্রীর নিকট থেকে ৬০ টাকা পরীক্ষার ফি নিয়ে তাদের শিখিয়ে দেয় কোন শিক্ষা অফিসার জানতে চাইলে ওরা যেন ৩৫ টাকার কথা স্বীকার করে। ২৫ টাকার জন্য মানুষ গড়ার কারিগররা নির্লজ্জের মতো শিশুদের মিথ্যা শিখায়। তারপর চারু ও কারুকলার নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যা হচ্ছে তা আর কি বলবো। শিক্ষকদের লোভের কারণে চারু ও কারুকলার আসল উদ্দেশ্য চাপা পরেছে, ভেস্তে গেছে। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখন মাটি দিয়ে আম, পেঁপেঁ, পেয়ারা, ডালিম, আপেল ইত্যাদি বানিয়ে নিতাম। আজ তা অতীত হয়ে গেছে।
অমুক স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়লে তমুক স্যার রাগ করেন। তমুক স্যারের ভালবাসা, আদর আর পাওয়া যায় না। স্যারদের ভালবাসা পেতে হলে কমছে কম তিনজন স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে হবে। যাই হোক-এটা আছে, থাকবে। এগুলো বন্ধ করতে হলে শিক্ষকদের নীতি-নৈতিকতার উপরে মাসকে মাস প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তা আবার প্রতি বছর না দিলে লোহার মতো জং ধরে নষ্ট হয়ে যাবে। বছরে একবার হলেও কর্মকারের মতো সান দিতে হবে। লোহায় মরিচা ধরলে বড়জোর একটি স্থপনার কিছু অংশ অকেজো হয়। কিন্তু শিক্ষকদের নীতি-নৈতিকতায় মরিচা ধরলে একটি জাতি ধ্বংস হয়। বিষয়টি সকলকে মনে রাখতে হবে।
এক স্কুলের শিক্ষকদের সাথে অন্যস্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনে নগ্ন প্রতিযোগিতা চলে। ক্লাসে ঠিকমতো পড়াবেন না, কিন্তু জিপিএ-৫ বেশি লাগবে, লাগবে ইউনিয়ন বা পৌরসভার নির্ধারিত সব কয়টা বৃত্তি। এতোগেলো স্কুলে-স্কুলে। এরপর আছে পরীক্ষার কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা যদি লেখা পড়ার ক্ষেত্রে থাকত তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরা ধন্য হত, অভিভাবকরা শ্বস্তি পেত। অমুক কেন্দ্রের চেয়ে আমার কেন্দ্রে জিপিএ-৫ বেশি চাই-ই চাই। বৃত্তি যেন একটাও অন্য কেন্দ্রে যেতে না পারে। প্রয়োজনে বৃত্তির পায়ে শিকল দিয়ে বেধে রাখবো! আমার কেন্দ্রের সুনাম রাখতেই হবে। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র আর কেন্দ্র থাকে না। যতখুশি সাইড ফলো করতে পার করো, কিন্তু কথা বলবা না। কোন উত্তর না পারলে পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা শিক্ষকদের কাছে জানতে চাও, তারা বলে দিবেন। এজন্য অন্য এলাকা থেকে দায়িত্ব পালন করতে আসা শিক্ষকদের ম্যানেজ করতে যা যা লাগে সবটাই করেন। আর প্রতিদিন দুপুরে কোরমা, পোলাও, হাঁস-মুরগীর মাংস ও রুটি পিঠা তো চলছেই। এগুলো হলো পরীক্ষার কেন্দ্রের বাস্তব চিত্র। ভাল ভাল খাবার খেয়ে ৫০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর আগে থেকেই ঠিক করে দেন শিক্ষকরা। আপনি যদি কোন এক নরমাল ছাত্র-ছাত্রীর খাতা দেখেন তাহলে এর সঠিকতা খুঁজতে কোথাও যেতে হবে না। ধরুন সে লেখায় পেয়েছে ১০-১৫ নম্বর, কিন্তু নৈর্ব্যক্তিকে ৫০শে পঞ্চাশ।
আসল কথায় আসি। তাসনিনের সাথে প্রতিদিন আমি কেন্দ্রে যেতাম। পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্র সুপারের কাছে অনুরোধ করতাম যেন পরীক্ষার হলে কোন শিক্ষক ওকে কিছু না বলে দেয়। আমার বিশ্বাস ছিলো তাসনিনকে কিছু বলতে হবে না। বরং স্যারেরা বার বার ওর কাছে গেলে সমস্যা হবে, ভুল করবে। ও যা পারবে তা লিখবে। তাই অনুরোধ করতাম। তারপরও কোন শিক্ষক কিছু বলে দিলে আমি প্রতিবাদ করতাম। যারফলশ্রুতিতে তাসনিনরা জিপিএ-৫ পায় নি। ওদের সাথে সাথে ওদের স্কুলও জিপিএ-৫ বঞ্চিত হলো। অবশ্য ওদের প্রধান শিক্ষক আমাকে শুরু থেকেই নিষেধ করেছিলেন।
কীভাবে জিপিএ-৫ নষ্ট হলো? বলছি। এই অঞ্চলের একজন শিক্ষক আছেন যার হাত অনেক লম্বা। আগে শুনছি এখন বিশ্বাসও করছি। শুধু কী লম্বা? কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত তাঁর হাত। বর্তমানে অবসরে গেছেন। কিন্তু হাত আর খাটো হচ্ছে না। এখন নাকি আরও লম্বা হচ্ছে। যুক্তিটা হচ্ছে এখন তাঁর চাকুরী নাই, তাই কোন ভয় নাই। জনশ্রুতি আছে শিক্ষা অফিস থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী কুয়াকাটায় আসলেই লম্বা হাতওয়ালা শিক্ষক বাসায় ভাল ভাল খাবার তৈরী করে হোটেলে নিয়ে যান। তাদের সাথে খাতিল পিরিত জমান, সখ্যতা গড়ে তোলেন। এভাবে আস্তে আস্তে, ধীরে ধীরে হাত লম্বা হয়েছে। যার ফলে তিনি এ অঞ্চলের শিক্ষক সমাজের অভিভাবক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। কোন শিক্ষক কোন ঝামেলায় পরলে তাঁর কাছে ছুটে আসেন। তিনি সমস্যা সমাধান করে দেন। এতেই তাঁর শান্তি, পান তৃপ্তি। এই শিক্ষক মোড়ল ইচ্ছা করলে বলতে পারেন কোন স্কুলের পরীক্ষার খাতা কোথায় যায়, কোন শিক্ষক দেখবেন। তারপর কোন কোন রোল জিপিএ-৫ পাবে না বা দেওয়া যাবে না তা তিনি ঠিক করে দেন। তাঁর ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। প্রিয় পাঠক পটুয়াখালীর জেলার কোন শিক্ষক বা শিক্ষা কর্মকর্তা লেখাটি পড়লে এতক্ষণে বুঝে ফেলছেন তিনি কে? আপনারা হয়তো অনেকে আন্দাজ করতে পেরেছেন, আবার অনেকে হয়তো পারেন নি। কিন্তু আমি তাঁর নাম বলবো না। কারণ আমি শিক্ষকদের খুব সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। তাই আমি তাঁর সম্মান নষ্ট করতে চাই না।
উপরোক্ত কারণেই আমি তাসনিনের জন্য জিপিএ-৫ চাই। ইতোমধ্যে ৬০০ টাকায় ১১ নম্বর কিনেছি। বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতিতে এ প্লাস পেতে ২২ নম্বর টান আছে। এই ২২ নম্বর কিনতে টাকা যা লাগে দিবো, তবুও জিপিএ-৫ চাই। মানুষের সঠিক প্রাপ্য না দিলে মানুষ কষ্ট পায়। তাসনিন কষ্ট পাবে না কেন? কিন্তু এই সকল শিক্ষকদের চিহ্নিত করে সঠিক বিচারের আওতায় আনলে আমার কোন আপত্তি নাই। # # #
লেখক: বার্তা সম্পাদক, অনলাইন সাগরকন্যা।
No comments